
ডেস্ক রিপোর্ট : : কোন রকম ঘুরিয়ে পেচিয়ে নয়- একেবারে সরাসরি বলছি- আমাদের দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতির ছুটিতে যাওয়া
এবং এতদসংক্রান্ত ছুটির দরখাস্তে বানান ভুল এবং বাংলায় স্বাক্ষর করা নিয়ে যা হচ্ছে তার দায় আওয়ামী লীগকে বহু বছর ধরে বহন করতে হবে।
বর্তমান মেয়াদের সরকারকে বলা হয় Gift of a judgement তত্ত্বাবধায়ক প্রথা বাতিলের সেই রায়ের পেছনে জনাব সিনহার অবদান কোন অংশে কম ছিলো না। যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পন্ন করার মাধ্যমে জনাব সিনহা যা করেছেন তার সুফলের কারণে বর্তমান সরকার ইতিহাসের সর্বোত্তম সুসময় পার করে চলেছেন। কাজেই জনাব সিনহার সঙ্গে সরকারের দূরত্ব ও ভুল বুঝাবুঝির কোন ব্যাকারণগত ত্রুটি থাকার কথা নয়।
এ কথা সত্য যে, ষোড়শ সংশোধনী বাতিল এবং সেই সংক্রান্ত রায়ে জনাব সিনহার কিছু মন্তব্য সরকারকে নিদারুণভাবে সংক্ষুব্দ করেছে। সরকার যদি একটু মাথা ঠান্ডা করে ভাবতেন তবে লক্ষ্য করতেন যে, একধরনের হতাশা থেকেই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মূলত, আইন মন্ত্রণালয়, সুপ্রীমকোর্টের প্রশাসনিক দপ্তর এবং বিচারপতিদের স্বাধীনচেতা মনোভাবের মধ্যে পড়ে জনাব সিনহার পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছিলো না।
নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস এবং অর্ন্তদ্বন্দ্ব সত্ত্বেও সব দিক থেকে জনাব সিনহাই ছিলেন সরকারের জন্য সর্বোত্তম ব্যক্তি। এটা যে কতটা নির্মম সত্য তা সরকার আগামী দিনগুলোতে হাড়ে হাড়ে টের পাবেন। জনাব সিনহার সরকারের কারো কারো প্রতি অভিমান ছিলো কিন্তু শত্রুতা ছিলো না। তিনি উপকার কতোটা করতেন তার চেয়েও মূখ্য ছিলো যে, তার দ্বারা কোনোদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কোনো ক্ষতি হতো না।
সরকার জনাব সিনহার অতীত কর্মকা-কে বিবেচনায় না এনে তার সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যকে প্রাধান্য দিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা যেমন অতীব আশ্চর্যজনক তেমনি তার চেয়েও আশ্চর্যজনক বিষয় হলো তাকে নিয়ে সরকার বিরোধীদের মায়াকান্না। জনাব সিনহার অতীত ইতিহাস, লেখাপড়া, ব্যক্তিত্ব ও চরিত্রের কারণে সরকার যে সুবিধাটুকু পেয়েছে এবং অনাগত দিনে পেতো তা অন্য কারো নিকট থেকে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
এবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে কিছু বলি। তার সততা এবং দূর্বার সাহস প্রশ্নাতীত। তিনি ধার্মিক এবং সত্য নিষ্ঠ। আপীল বিভাগের কয়েকটি রায়ে তিনি ভিন্নমত পোষণ করে যে ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন তা অনাগত দিনে উজ্জল ইতিহাস হয়ে থাকবে। তার জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা, দৃঢ়তা এবং মেধাদীপ্ত দক্ষতার সমপর্যায়ের প্রধান বিচারপতি অতীতে কতোজন ছিলো তা খোজা খুবই দুষ্কর বিষয়। কাজেই তিনি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কতটা দৃঢ় এবং কঠোর হবেন তা সহজেই অনুমেয়।
কোনো পরিবর্তন ছাড়াই গোলাম মাওয়া রনির ফেসবুক থেকে নেওয়া