
কালিয়াকৈর(গাজীপুর)প্রতিনিধিঃ: পঞ্চম ধাপের এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ সম্পন্ন হয়েছে
। তৃতীয় ধাপের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৪শে মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
শেষ মুহুর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। শেষ বেলাতে এসে একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের বুলি ছুড়ছেন প্রার্থীরা। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ না করলেও চেয়ারম্যান পদে কালিয়াকৈরে ক্ষমতাসীন দল আ’লীগের দলীয় প্রার্থী নৌকা প্রতীক ও বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের প্রার্থী রয়েছে।
প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা, নির্বাচনী অফিস ভাংচুর, নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানান অভিযোগ একে অন্যের বিরুদ্ধে তুলে ধরছেন দুই প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।
অনেকটা কৌশলী মনোভাব দেখা যাচ্ছে প্রার্থীদের মধ্যে।কারণ দুজনের একটাই লক্ষ যেভাবেই হোক ভোটারদের আকৃষ্ট করে জয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাচনে নৌকার মাঝি রেজাউল করিম রাসেলে বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ও শর্টগান নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার অভিযোগে সোমবার বিকেলে সফিপুর বাজারে তিন সহ¯্রাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ সভা করেছে। বিক্ষোভ সমাবেশটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সফিপুর বাজার ষ্ট্যান্ড এলাকা প্রদক্ষিণ করে।পরে সফিপুর বাজারে পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক আব্দুল ওয়াহাব মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুরাদ কবীর, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিকদার মোশারফ হোসেন, মৌচাক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক হাবিবুর রহমান সিকদার, যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড, হাবিবুল্লাহ বেলালি, অ্যাড হারুন অর রশিদ, মোশারফ হোসেন জয়, রফিকুল ইসলাম তুষার,মফিজুর রহমান লিটন,
এদিকে গত (সোমবার, ১৮ই মার্চ) কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) রেজাউল করিম রাসেল ও একই দলের উপজেলা আ’লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস) কামাল উদ্দিন সিকদার পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
ওইদিন দুপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর এলাকায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী(আনারস প্রতীক) ও কালিয়াকৈর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন সিকদার জানান, গত (রোববার, ১৭ই মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সফিপুর আন্দারমানিক এলাকায় আমার আনারস প্রতীকে প্রচার-প্রচারণা চলাকালে আমার কর্মী ও সমর্থককারীদের নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেলসহ তার কর্মীরা অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে।
এসময় দৌড়ে কোনরকমে আমার কর্মী ও সমর্থককারীরা তাদের জীবন রক্ষা করে। পরে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে নৌকার প্রার্থী রাসেল তার লোকজন নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
এর পর বিকেল ৫টায় কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী(নৌকা প্রতীক)ও গাজীপুর জেলা আ’লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক,বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাসেল বলেন,গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের মাধ্যমে আমাকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মাঝি করে নির্বাচন করার অনুমতি প্রদান করেন। কিন্তু এরপর থেকেই উপজেলা ও পৌর আ’লীগের, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিএনপির সিনিয়র নেতারা এক হয়ে নৌকার বিজয় যাতে নিশ্চিত না হয় সেজন্য তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি ও কর্মীদের ভয়ভীতি এবং হুমকি দেওয়াসহ আনারস প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী কামাল উদ্দিন সিকদারের কর্মীরা নৌকা প্রতিকের কয়েকটি নির্বাচনী অফিস বন্ধ করেছে এবং পৌর ৬ নং ওয়ার্ডের কর্মীদের নৌকার ব্যাচ কেড়ে নিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেল। এসব ঘটনায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার নিকট আনারস প্রতিকের নেতা কর্মীদের নামে পৃথক তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দলের সম্মান রক্ষায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার পৌর এলাকায় তার কর্মী ও নিজের গাড়ীতে হামলা করে, কর্মীদের আটকে রাখে এবং প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তিনি তিনি প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের দলীয় প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেল ও একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল উদ্দিন সিকদার একে অন্যের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে যে অভিযোগ তুলে ধরেছেন তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন সাধারণ ভোটাররা। নির্বাচনে যাতে কোন সহিংসতা না হয় সেটাই কাম্য ভোটারদের। এখন কেবল অপেক্ষার পালা।