সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউলের
বিরুদ্ধে থানায় আটকে ও মামলার ভয় দেখিয়ে গরু ব্যবসায়ীর টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের চর পোরজনা গ্রামের মৃত দরদ আলী শেখের ছেলে গরু ব্যবসায়ী মো. আজাদ আলী শেখ ১৭ জানুয়ারি শাহজাদপুর থানা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাহমিদা হক শেলীর বরাবর লিখিতভাবে এমন অভিযোগ করেছেন।
আজাদ আলী শেখ বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিনভর পাবনার বেড়া উপজেলার চতুর আলীর হাটে পাঁচটি গরু বিক্রির মোট ৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ও একটি অবিক্রীত গরুসহ সহযোগী ঝন্টু ওরফে রাজ্জাক ও ড্রাইভার স্বপনকে সঙ্গে নিয়ে ওই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভটভটিযোগে বাড়ি ফিরছিলাম।
তিনি বলেন, আমাদের ভটভটি শাহজাদপুর উপজেলার নগরডালা করতোয়া ব্রিজের পূর্ব পাশে মুছার সারের দোকানের সামনে পৌঁছালে শাহজাদপুর থানার এসআই সামিউল আমাদের পথরোধ করে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র দেখতে চায়।
এই গরু ব্যবসায়ী বলেন, সব ধরনের কাগজপত্র দেখানোর পরেও তিনি আমাদের তিনজনকে জোরপূর্বক থানায় নিয়ে যান। এরপর দুই ঘণ্টা বাইরের একটি বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন। পরে আমার কাছে থাকা ৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা এসআই সামিউল তার কাছে নিয়ে নেন। এরপর আমাদের তিনজনকে থানার হাজতে রাখে।
তিনি বলেন, রাত ৩টার দিকে আমাদের হাজত থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় আমি আমার টাকা ফেরত চাইলে এসআই সামিউল ৯৩ হাজার টাকা রেখে আমাকে বাকি টাকা ফেরত দেয়।
আজাদ আলী শেখ বলেন, বাকি ৯৩ হাজার টাকা ফেরত চাইলে এসআই সামিউল আমাকে ডাকাতি মামলাসহ বিভিন্ন প্রকার মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের বানানো কাগজপত্রে আমাদের তিনজনের টিপসই নেন।
তিনি বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ওই টাকা ফেরত না পেয়ে অবশেষে ওই টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় গত ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার শাহজাদপুর থানা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাহমিদা হক শেলীর বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করি।
জানতে চাইলে এসআই সামিউল বলেন, ‘তাদের কথাবার্তা অসংগত ও আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই তাদেরকে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়।
তার দাবি, গরু ব্যবসায়ী আজাদের কাছে থেকে কোনো ধরনের টাকা রাখা হয়নি। তাকে সম্পূর্ণ টাকাই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার এ অভিযোগ মিথ্যা ও সম্পূর্ণ বানোয়াট।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, তার অভিযোগ মিথ্যা। সে সব টাকা বুঝে পেয়েই জিডিতে স্বাক্ষর করে গেছেন। তার পরেও কেন অভিযোগ করা হলো এবং এটা ষড়যন্ত্র কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানতে চাইলে শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাহমিদা হক শেলী বলেন, অভিযোগকারী সম্পূর্ণ টাকা বুঝে পেয়ে জিডিতে স্বাক্ষর করে গেছেন। তার পরেও অভিযোগটি কেন করা হলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই তাদের নোটিশ দিয়ে ডাকা হয়েছে। তদন্তে যার দোষ প্রমাণিত হবে তার বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।