সদ্য সংবাদ

 রাসিক কাউন্সিলর আরমানের বিরুদ্ধে টিসিবির পণ্য সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ  বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড  অটো মালিক- শ্রমিক সমিতির চেক বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  উত্তরাঞ্চলের মাটিতে বাড়ছে অম্লত্ব, কমছে ফলন  চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে নেসকো মিটার রিডারদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি  রুয়েটে সিটিজেন চার্টার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত  ঈশ্বরদী রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত  মল্লিকের চর শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্টের মেধাবৃত্তি পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণ।  কচিকন্ঠের আসরের প্রতিনিধি সন্মেলন অনুষ্ঠিত।  গুজব মোকাবেলায় গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে রাজশাহীতে সিজিএস’র কর্মশালা  রাজশাহী সাংবাদিক সংস্থার যাত্রা শুরু  শামীম ওসমান ১০ বছরেও শোধ করেনি বন্ধুর ২৬ লাখ টাকা।  মল্লিকের চর শিক্ষা কল্যান ট্রাস্টের শিক্ষা বৃত্তির ফলাফল প্রকাশিত।  মল্লিকের চর শিক্ষা কল্যান ট্রাস্টের উদ্যোগে,মেধা শিক্ষা বৃত্তি প্রদান  রুয়েটে প্রথমবারের মতো ‘ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া কোলাবোরেশন মিট’ অনুষ্ঠিত  ফল মার্কেটের দাবি রাজশাহীর ফল ব্যবসায়ীদের  নারায়ণগঞ্জকে মাদকমুক্ত করার অঙ্গীকার করলেন শামীম ওসমান  সংসদে কপিরাইট বিল পাস   কাস্টমসের ২৭০ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি  ভিয়েতনামে পৌঁছে ভারতের উদ্দেশে যা বললেন বাইডেন

ট্রাম্পকে আইএসের ভিডিওতে হুমকি দিত যে আমেরিকান বালক

 Mon, Nov 23, 2020 9:46 PM
 ট্রাম্পকে আইএসের ভিডিওতে হুমকি দিত যে আমেরিকান বালক

এশিয়া খবর ডেস্ক:: আমেরিকান এক বালক যে ইসলামিক স্টেটের তৈরি করা

 ভিডিওতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুমকি দিতো সে বলেছে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে পেরে সে স্বস্তি বোধ করছে। ম্যাথিউ নামের এই বালকের বয়স যখন আট বছর তখন তার মা ও সৎ পিতা তাকে সিরিয়াতে নিয়ে গিয়েছিল। এর দু'বছর পর সেখানে তৈরি করা ভিডিওতে সে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে হুমকি দিয়ে বলতো, আমেরিকার মাটিতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে।

এখন তার বয়স ১৩। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী তাকে ২০১৮ সালে দেশে ফিরিয়ে আনে এবং তার পর থেকে গত এক বছর ধরে সে তার পিতার সাথে বসবাস করছে। এই প্রথম সে কোন সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছে। ম্যাথিউ বলেছে,‘যা হওয়ার হয়ে গেছে। এগুলো সব পেছনের ঘটনা। আমার বয়স তখন এতো কম ছিল যে আমি এসবের কিছুই বুঝতাম না।’

যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পর তাকে কাউন্সেলিং সেবা দেয়া হয়েছে। ম্যাথিউর সৎ পিতা মুসা এলহাসানি ২০১৭ সালে ড্রোন হামলায় মারা গেছে বলে ধারণা করা হয়। তার মা সামান্থা স্যালিকে সন্ত্রাসবাদের অর্থ যোগান দেয়ার দায়ে সাড়ে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

যেভাবে সিরিয়াতে যায়

পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে আমেরিকার সাধারণ এই পরিবারটি তুরস্ক হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় চলে যায়।

‘আমরা অন্ধকারের মধ্যে দৌড়াতে থাকি। রাতের বেলা। অনেক জায়গাতেই কাঁটাতারের বেড়া ছিল। অনেক কিছুই আমি বুঝতে পারছিলাম না। আমাকে দৌড়াতে হচ্ছিল,’ জানায় ম্যাথিউ।

এক সময় তারা গিয়ে পৌঁছায় ইসলামিক স্টেটের তথাকথিত রাজধানী রাক্কা শহরে। তার সৎ পিতা এলহাসানিকে পাঠানো হয় সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি আইএসের চোরাগোপ্তা হামলাকারীতে পরিণত হন।

‘আমরা যখন রাক্কা শহরে গিয়ে পৌঁছলাম প্রচুর আওয়াজ শুনতে পেতাম, সাধারণত গোলাগুলির শব্দ। একবার বেশ কিছু বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো, কিছুটা দূরে। সে কারণে আমাদের তেমন একটা দুশ্চিন্তা ছিল না।’

ম্যাথিউর ভিডিও

সিরিয়াতে চলে যাওয়ার দু'বছর পর তার মা অর্থ চেয়ে আমেরিকায় তার এক খালার কাছে একটি ইমেইল পাঠাল। এসব ইমেইলে ম্যাথিউর মারাত্মক ধরনের কিছু ভিডিও সংযুক্ত করা হতো। একটি ভিডিওতে দেখা গেল এলহাসানি ম্যাথিউকে আত্মঘাতী বেল্ট পরতে জোর করছে। তার সৎ পিতার নির্দেশনায় তাকে বলতে শোনা গেল বিস্ফোরক দিয়ে সে কীভাবে আমেরিকার সৈন্যদের হত্যা করবে।

আরেকটি ভিডিওতে তাকে এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে একটি একে-৪৭ রাইফেল নিয়ে প্রস্তুত হতে দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন বাহিনী যখন রাক্কা শহরে বিমান হামলা জোরদার করলো একদিন তাদের কাছের একটি বাড়ি বোমা পড়ে বিধ্বস্ত হল।

২০১৭ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে রাক্কা মোটামুটি একটি বিধ্বস্ত শহরে পরিণত হল। কিন্তু ইসলামিক স্টেট তখনও দাবি করে যাচ্ছিল যে যুদ্ধে তারাই জয়ী হচ্ছে। তখন ম্যাথিউকে বাধ্য করা হল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে এরকম বার্তা দিয়ে ভিডিওতে বক্তব্য রাখতে।

ইসলামিক স্টেট তখন একটি ভিডিও ছাড়ল যাতে দেখা গেল, ম্যাথিউ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুমকি দিচ্ছে।
‘ট্রাম্পের প্রতি আমার বার্তা: তিনি ইহুদিদের পুতুল। আল্লাহ আমাদেরকে জয়ী আর তোমাদের পরাজিত করার অঙ্গীকার করেছেন,’ ম্যাথিউ বললো এই কথাগুলো তাকে মুখস্থ করানো হয়েছিল।

‘রাক্কা কিংবা মসুলে এই যুদ্ধ শেষ হচ্ছে না। এই যুদ্ধ শেষ হবে তোমাদের মাটিতে। ফলে প্রস্তুত হও। যুদ্ধ মাত্র শুরু হয়েছে।’

ম্যাথিউ বলে এই ভিডিওতে অংশ নেয়া ছাড়া তার কাছে আর কোনো বিকল্প ছিল না। না হলে তার সৎ পিতা রাগে ফেটে পড়তেন।

‘তিনি মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না।’

এর কিছুদিন পর এলহাসানি ড্রোন হামলায় নিহত হন বলে ধারণা করা হয়।

‘আমি খুশি হয়েছিলাম কারণ আমি তাকে পছন্দ করতাম না। আমরা সবাই আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম।’

সিরিয়া থেকে যেভাবে পালাল

ম্যাথিউর মা সামান্থা স্যালি তখন মানব পাচারকারীদের অর্থ দিয়ে চার সন্তানকে সাথে নিয়ে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। একটি ট্রাকে করে আইএসের তল্লাশি চৌকি পার হওয়ার সময় ট্রাকের পেছনে রাখা ব্যারেলের ভেতরে ম্যাথিউকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কুর্দিদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গিয়ে পৌঁছানোর পর তাদেরকে একটি বন্দী শিবিরে আটক করে রাখা হল। সে সময় মা স্যালির সঙ্গে প্রথম কথা বলতে পেরেছিল বিবিসি।

তখন তিনি বলেছিলেন যে তার স্বামী তাকে ধোঁকা দিয়ে সিরিয়াতে নিয়ে গেছে। স্বামীর পরিকল্পনার বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, রাক্কায় থাকার সময় একবার তার স্বামী তার উপর সহিংস হয়ে উঠেছিলেন।

স্যালি জানান, দাস হিসেবে তারা দুটো ইয়াজিদি কিশোরীকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন। তার স্বামী তাদেরকে নিয়মিত ধর্ষণ করতো।

দেশে ফিরে যাওয়া

যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়ার পর কারাগারে থাকার সময়েও স্যালি একই ধরনের কথা বলে গেছেন। যদিও স্যালি বলেছেন যে, তিনি তার স্বামীকে সমর্থন দিয়েছেন মাত্র। তিনি মনে করেন, স্বামীকে সমর্থন দিয়ে আইএসে যোগ দেয়ার মধ্যে দোষের কিছু নেই। কিন্তু বিবিসির অনুসন্ধানে অন্য ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে।

মুসা এলহাসানি পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন, পরিবারটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলে আসার কয়েক মাস আগে থেকেই স্যালির স্বামী মুসা আইএসের সমর্থক ছিলেন। বাড়িতে বসেই তিনি আইএসের প্রচারণা-ধর্মী নানা রকমের ভিডিও দেখতেন।

সামান্থা স্যালির একজন বন্ধুও বলেছেন যে, স্যালি একবার তাকে বলেছিলেন যে তার স্বামী তাকে জানিয়েছিলেন ‘পবিত্র যুদ্ধে’ যোগ দেয়ার জন্য তার কাছে ডাক এসেছে। বিবিসি আরো জানতে পেরেছে যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে আসার আগে স্যালি বেশ কয়েকবার হংকং গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কমপক্ষে ৩০ হাজার ডলার নগদ অর্থ এবং স্বর্ণ জমা রেখেছিলেন। জেলখানায় প্রায় এক বছর থাকার পর স্যালি তার গল্প বদলাতে শুরু করেন এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগান দেয়ার দায় স্বীকার করে নেন। ধারণা করা হচ্ছে, সাজা কমানোর উদ্দেশ্যে তিনি এই অপরাধের কথা স্বীকার করেন।

সরকারি আইনজীবীরা বলছেন, তার স্বামীর আইএসে যোগ দেয়ার ব্যাপারে স্যালি কেন সাহায্য করেছিলেন তার উত্তর হয়তো কখনোই জানা যাবে না। কিন্তু স্যালির আইনজীবী বলেছেন, তার স্বামী তাকে সবসময় নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সে কারণে তিনি এটা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। সূত্র : বিবিসি

Advertisement
Advertisement
Advertisement
Advertisement
Advertisement
Advertisement

আরও দেখুন