
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:: উচ্ছেদের পর পরই সরকারি স্কুলের জমি ও যাতায়াতের রাস্তা
বন্ধ করে রাতের আধাঁরে অবৈধ স্থাপনার অভিযাগ উঠেছে প্রভাবশালী এক ভুমি দস্যুর বিরুদ্ধে। রাতের আধাঁরে রাস্তার উপর স্থাপনা নির্মান করায় চরম বিপাকে ও অবরুদ্ধ এলাকাবাসিসহ শিক্ষার্থরা। বিদ্যালয়ের জমি দখল মুক্ত ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আজ মঙ্গলবার ভুক্তভোগি এলাকাবাসি উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন গোড়াই মমিননগর সৈয়দপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসি জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আঞ্চলিক রোড গোড়াই-সখীপুর –ঢাকা রোড সংলগ্ন ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। গোড়াই ইউনিয়নের সৈয়দপুর মৌজার ২৪৩৩ নং দাগের ৯০৭ খতিয়ানের মধ্যে ৫০ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে। এই জমিতে বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত সরকারি কর পরিশোধ করা হয়। সৈয়দপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ খানের ছেলে প্রভাবশালী মো. আজম খান (৫৫) এবং মো. আনোয়ার মাস্টার (৫৩)সহ কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে রাস্তা বন্ধ কওে দিয়ে রাতারাতি পাকা ভবন নির্মান করেছে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ের পাশের রাতের আধাঁরে রাস্তা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করছে। আজম খানকে বারবার নিষেধ করার সত্তেও রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে না নেওয়ায় এলাকাবাসি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১১ নভেম্বর সহকারি কমিশনার (ভুমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন পুলিশের সহযোগিতায় অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেন। এ সময় সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ভুমিদস্যু আজম খান ও তার সহযোগিরা অভিযোগ করেন। অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়ার পরই গত ১৮ নভেম্বর রাতের আধারে আজম খান তার বাহিনী নিয়ে রাতের আধারে আবারও সরকারি রাস্তা দখল করে অভৈধ স্থাপনা নির্মান করেছেন। ফলে চরম বিপাকে পরেছেন এলাকাবাসি।
ভুক্তভোগিদেও মধ্যে মোশারফ হোসেন, নুর মোহাম্মদ,রফিক মিয়া, আওলাদ হোসেনসহ এখাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ভুমিদস্যু আজম খানের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাদের নানা ভাবে মিথ্যা মামলায় হয়রানী করছেন। সরকারি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পরেছেন পুরো গ্রামবাসি।
এ ব্যাপারে মো. আজম খান ও মো. আনোয়ার হোসেন মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, সৈয়দপুর মৌজায় ২৪৩৫ নং ও ২৪৪৮ নং দাগের মধ্যে মো. মজিদ খান, মোকছেদ আলী, কেশব সরকার ও গয়ানাথ সরকার জমি বিদ্যালয়ের নামে দান করে দিয়ে সৈয়দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিদ্যালয়ের পাশে তাদের জমি রয়েছে। তারা দাবী করেন, আমরা বিদ্যালয়ের কোন জমি জবর দখল করিনি। আজম খান বলেন, আমার নিজের রাস্তা ভাড়া দিয়েছিলাম এ নিয়ে এলাকার লোকজনের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। আমি রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়দেব সরকার বলেন, এটা বিদ্যালয়ের জমি। এলাকার কিছু লোকজন বিভিন্ন ভাবে কাগজ তৈরী করে বিদ্যালয়ের জমি জবর দখলের চেষ্টা কওে রেখেছেন। বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধার ও রাস্তা দখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক ও সহকারি কমিশনার (ভুমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছিল। আবার রাতের আধাঁরে রাস্তা দখল কওে অভৈধ স্থাপনা হয়েছে। এলাকাবাসির পক্ষে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মহোদয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে রাস্তা দখল মুক্তসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।