
এশিয়া খবর ডেস্ক:: বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় ভুল আসামি হয়ে প্রায়
পাঁচ বছর ধরে কারাগারে থাকা মিরপুর বেনারসি পল্লীর কারিগর মো. আরমানকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, পুলিশের অবহেলা ও গাফলতির কারণে আরমানকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে পুলিশ মহাপরিদর্শক এবং ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত রিট মামলার শুনানি শেষে আরমানের আটকাদেশ অবৈধ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত এ রায় দেন।
পাশাপাশি আরমানকে আসামি করার সঙ্গে জড়িত চার পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ওই চার পুলিশ কর্মকর্তা হলেন- পল্লবী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দাদন ফকির, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম ও মো. রাসেল। তাদের বর্তমান দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে 'ক্লোজ' করতে ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ রাসেল চৌধুরী।
'কারাগারে আরেক জাহালম' শিরোনামে ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন রিট আবেদনটি করেছিল।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০০৫ সালের ৩০ আগস্ট রাতে পল্লবীর ৬ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের ৮ নম্বর লেনের একটি বাসা থেকে ৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ শাহাবুদ্দিন বিহারী এবং তার দুই সহযোগী সোহেল মোল্লা ও মামুন ওরফে সাগরকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এরপর তাদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দুই বছর কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান শাহাবুদ্দিন। কিন্তু তিনি আর আদালতে হাজির হননি। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এরপর শাহাবুদ্দিন ২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। এই মামলায় ২০১২ সালের ১ অক্টোবর রায়ে শাহাবুদ্দিন বিহারীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। কিন্তু রায়ের দিন শাহাবুদ্দিন পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে ফের পরোয়ানা জারি করেন। ওই মামলায় ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি পুলিশ আরমানকে গ্রেপ্তার করে। মূল আসামি শাহাবুদ্দিন বিহারীর বাবার নাম ইয়াসিন ওরফে মহিউদ্দিন। আরমানের পিতার নামও ইয়াসিন। উভয় ইয়াসিনই মৃত। যে কারণে আরমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।