
এশিয়া খবর ডেস্ক:: পুরান ঢাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদার ১৬৬ ভরি স্বর্ণ রাজবাড়ী
নিয়ে যাচ্ছে- এই তথ্য ডাকাত দলকে দিয়েছিল তারই 'বিশ্বস্ত' কর্মচারী সুরেশ চন্দ্র হালদার। পরে সাভারের আমিনবাজারে পুলিশ পরিচয়ে বাস থেকে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে সব স্বর্ণ লুটে নেয় তারা। এ ঘটনায় চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রোববার দুপুরে ঢাকা জেলা পিবিআইর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম উত্তরায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি খোরশেদ আলম বলেন, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর সকালে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদার তার দোকানের কারিগর সুরেশ হালদারকে সঙ্গে নিয়ে রাজবাড়ী জেলার পলাশ জুয়েলার্স ও রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সের মালিকদের অর্ডার দেওয়া স্বর্ণ সরবরাহের জন্য রওনা হন। একটি কালো ট্রলি ব্যাগের মধ্যে ১৬৬ দশমিক ৫৫৩ ভরি স্বর্ণ (চেইন, কানের দুল, বল চেইন, কানপাশা) ছিল, যার বাজার মূল্য এক কোটি ১৫ লাখ টাকা। তাঁতীবাজার থেকেই তারা গাবতলীর বাসে ওঠেন। গাবতলী গিয়ে ওই বাস থেকে নেমে রাজবাড়ী যাওয়ার একটি বাসে ওঠেন তারা। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাসটি আমিনবাজারের পাওয়ার প্লান্টের কাছে পৌঁছাতেই চারটি মোটরসাইকেলে ১০-১২ জন মাস্ক পরা লোক বাসটি থামায়। তারা বাসে উঠে পুলিশ পরিচয় দিয়ে অর্জুন হালদার ও সুরেশ হালদারকে জোর করে বাস থেকে নামিয়ে মোটরসাইকেলে তুলে গাবতলীর দিকে রওনা হয়। পরে ফাঁকা জায়গায় স্বর্ণের ব্যাগটি নিয়ে দু'জনকে রাস্তায় ফেলে তারা পালিয়ে যায়।
এসপি বলেন, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে অর্জুন হালদারের কর্মচারী সুরেশ হালদারও ওই ডাকাত চক্রের সদস্য। অর্জুন হালদার সঙ্গে স্বর্ণ নিয়ে রাজবাড়ী যাচ্ছে- এই তথ্য ডাকাতদের জানিয়েছিল সুরেশ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অর্জুন হালদার আদালতে ডাকাতির মামলা করেন। আদালত মামলাটির তদন্তভার দেন পিবিআই ঢাকা জেলাকে। গত ১৪ জানুয়ারি ডাকাত চক্রের চার সদস্য সুরেশ, মিঠুন মজুমদার ওরফে মিঠু, উজ্জ্বল চন্দ্র দাস ও মিহির দাসকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শনিবার চক্রের আরও চার সদস্য শংকর চন্দ্র ঘোষ, সোহেল আহমেদ পল্লব, মিঠুন চৌকিদার ও সাবেক সেনা সদস্য ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রে আরও অন্তত ১৫ সদস্য রয়েছে। চক্রটি তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে বিভিন্নভাবে ডাকাতি করে আসছিল।
সুরেশের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুরের হাটিপাড়ায়, মিঠুন মজুমদারের বাড়ি কেরানীগঞ্জের গোবিন্দপুর, উজ্জ্বলের বাড়ি কেরানীগঞ্জের পোথাইল, মিহির দাসের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের ঝাউটিয়া, সোহেলের বাড়ি রাজধানীর পল্লবী. ফারুকের বাড়ি সাতক্ষীরার তেঁতুলিয়া, শংকরের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর ও মিঠুন চৌকিদারের বাড়ি মাদারীপুরের পশ্চিম ছিলারচরে।