
ডেস্ক রিপোর্ট : : এক ভয়ংকর অ্যাপ নিয়ে ব্যপক আলোচনা শুরু হয়ে গেছে প্রযুক্তি জগতে। অ্যাপটির মাধ্যমে কোনো
তারকার মুখায়ব বা চেহারা প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে অন্য যেকোনো ব্যক্তির চেহারার ওপর। ব্যক্তির দেহ বা শরীর ঠিক থাকছে, কিন্তু চেহারা হয়ে যাচ্ছে সেলেব্রেটির! এই অ্যাপের অপব্যবহার শুরু হয়েছে মুহূর্তেই। তারকাদের চেহারা বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে পর্ন তারকাদের চেহারার ওপর। আর কাজটা এতটাই নিখুঁত যে সহজে বোঝা যায় না যে নেপথ্যে কোনো কারসাজি আছে। ‘ফেকঅ্যাপ’ নামে ওই অ্যাপটি ব্যবহার করে তৈরি করা নকল ভিডিও বা জিআইএফ-কে বলা হচ্ছে ‘ডিপফেকস’। গত মাসে এই অ্যাপ প্রকাশ করা হয়। তার পর থেকেই এটি ভাইরাল হয়ে গেছে। নামানো হয়েছে ১ লাখেরও বেশি বার। এই অ্যাপ ব্যবহার করে বানানো একটি ভিডিওতে দেখা যাছে, ‘জার্নি টু’ চলচ্চিত্রের একটি ভিডিও ক্লিপে অভিনেতা ডোয়াইন জনসনের চেহারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে অভিনেতা নিকোলাস কেইজের চেহারা দিয়ে! অর্থাৎ, ডোয়াইন জনসনের শরীর বা দেহ ঠিকই আছে, শুধু তার চেহারাটা হয়ে গেছে নিকোলাস কেইজের! বলাই বাহুল্য, এরপর থেকেই এই অ্যাপ দিয়ে অনেকেই চেনাজানা তারকাদের চেহারা ‘সুপারইমপোজ’ বা বসিয়ে দিয়েছেন পর্নো ভিডিওর অভিনেত্রীর চেহারার ওপর। মনে হচ্ছে খোদ ওই তারকাই অভিনয় করেছেন পর্নো ভিডিওতে। ইতিমধ্যে, গায়িকা আরিয়ানা গ্রান্দে, কেটি পেরি, অভিনেত্রী এমা ওয়াটসন, নাটালিয়া পোর্টম্যান, ডেইজি রিডলি ও গাল গাডট এই কান্ডের শিকার হয়েছেন। অনেক জায়গায় কারসাজি করা ভিডিও ‘সেলেব্রেটি সেক্স টেপ’ হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিবিসির এক নিবন্ধে এ ধরণের কিছু স্থিরচিত্র দেখানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যম ভাইসের এক নিবন্ধে দেখানো হয়েছে এমনই একটি পর্নো ভিডিও ফুটেজের সংক্ষিপ্ত অংশ। এতে দেখা যায়, ‘ওয়ান্ডারওম্যান’ খ্যাত অভিনেত্রী গাল গাডটই যেন পর্ন তারকা! প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের লেখা এমন বহু নিবন্ধেই এর সম্ভাব্য সুদূরপ্রসারী প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী তারকাদের চেহারা কারসাজি করে বানানো বিভিন্ন জিআইএফ আপলোড করেছেন জিএফওয়াক্যাটে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছে, এ ধরণের যেকোনো ভিডিও বা জিআইএফ আপলোড করা নিষিদ্ধ। অনেকে আবার রাজনীতিকদের ছবি নিয়েও মজা করছেন। কিন্তু ব্যক্তি পর্যায়ে এই অ্যাপ ব্যবহার হলে, তার পরিণতি হবে গুরুতর, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডিটে অনেকে এ ধরণের ‘ডিপফেকস’ আপলোড দিয়েছেন। তবে সেগুলোর বিরুদ্ধে রেডিট এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মূলত, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তারকাদের মুখায়বের অসংখ্য ছবি সংগ্রহ করে এই অ্যাপ। এরপর কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে এই অ্যাপ তারকাদের মুখের অঙ্গভঙ্গিকে ভিডিও আকারে রূপান্তর করে। ফলে পর্ন তারকা যেভাবে মুখের অঙ্গভঙ্গি করেন, তারকাদের ঠিক সেরকম অঙ্গভঙ্গির ছবি প্রতিস্থাপিত হয়ে যাচ্ছে মুহূর্তেই।