
এশিয়া খবর২৪ ডেস্ক :: মায়িশার গায়ে হলুদ। হলুদ আর গোলাপি রংয়ের লেহেঙ্গা পরে স্টেজে এসে উঠলেন তিনি।
সাথে বান্ধবী আর ভাই বোনেরা। কিন্তু ঘোমটার আড়ালে লাজনম্র কনের চিরাচরিত ভাবমূর্তি ভেঙ্গে তিনি শুরু করলেন নাচ।
হিন্দি গানের তালে মায়িশার এই নাচে উপস্থিত সবাই অবাক হলেন না বরং অংশ নিলেন আমন্ত্রিতদের অনেকে।
শুধু মায়িশা- নয়- নিজের বিয়েতে এখন অনেক মেয়েই নাচ, গান করছেন। আমার পরিচিত অন্তত ১৫ জন মেয়ে তাদের নিজেদের বিয়েতে নাচ-গানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। যোগ দিয়েছেন আন্দফূর্তিতে। তুলি সংগীতা তাদের একজন। পাঁচ বছর আগে নিজের বিয়েতে নেচেছেন।
আজ থেকে পাঁচ বছর আগে প্রথম যখন এই চল শুরু হয় তখন নিজের বিয়েতে তুলি নেচেছিলেন। তিনি বলছিলেন সেটা ছিল তার কাছে অত্যন্ত আনন্দের একটা মুহূর্ত। তিনি বলছিলেন “নাচটা আনন্দ থেকে চলে আসে”।
বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনে ধ্যান ধারনা বদলে আগের থেকে অনেক। এখন ওয়েডিং প্লানাররা পুরো অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে থাকেন। কনের নাচের প্রস্তুতি চলে বেশ আগে থেকেই।
প্রায় ১০ বছর ধরে ওয়েডিং প্লানার ও ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করছেন মাইনুর হোসেইন নিহাদ। তিনি বলছিলে কনে রা এখন তাদের কাছে প্রফেশনাল কোরিয়গ্রাফার চাচ্ছেন। অন্তত একমাস আগে থেকে মহড়া করছেন এই নাচ-গানের।
নিহাদ বলছেন এখন ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিয়েতে মেয়েরা এখন নিজেরাই নাচে অংশ নিতে চাচ্ছেন। যেটা গত দুই বছর থেকে শুরু হয়েছে বলে তিনি কাজের অভিজ্ঞতায় দেখেছেন। এবং এ ব্যাপারে তাদের পরিবারের থাকে পুরো সম্মত্তি।
তাহলে মেয়েরা কি চিরাচরিত লাজুক বউ এর ইমেজ থেকে বের হতে চাচ্ছেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তৌহিদুল হক , যিনি বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু নিয়ে গবেষণা করেন তিনি বলছিলেন এটা সাংস্কৃতিক বিশ্বায়নের বহিঃপ্রকাশ ।
তবে এই চল এখনো শুধু বড় শহরে এবং উচ্চ এবং উচ্চ মধ্যবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে মনে করেছেন এই গবেষক। এদিকে মেয়েরা বলছেন বিয়ের অনুষ্ঠানে শুধু বর কেন আনন্দ-ফুর্তি করবে, কনেও আনন্দ করতে পারেন এবং এটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন তারা।
সূত্র: বিসি বাংলা