
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি :: মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে থাকা এমএলএস স্বাস্থ্যসহকারী চিকিৎসকরা চিকিৎসার নামে অর্থ বাণিজ্য করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইমার্জেন্সেীতে সকল ধরণের চিকিৎসা সরকারি খরচে হয়ে থাকে। কিন্তু ইমার্জেন্সেীতে কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা রোগিদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ যেনো দেখার কেউ নেই। ইমার্জেন্সেীতে বাণিজ্যের ছড়াছড়িতে বাহির থেকে লোক এনেও কাজ করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিভিল সার্জনের কাছে মৌখিক অভিযোগের পরিপেক্ষিতে শুধুমাত্র মাদক আসক্ত এমএলএস আজিমকে ইমারজেন্সিতে থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে মোবাইলে জানানো হয়েছে। কিন্তু ইমারজেন্সিতে সম্পূর্ণ টিপসই পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। ইমারজেন্সিতে ডাক্তার পাশে ওয়ার্ডবয় বসে রোগীদের তালিকা তৈরী করে।
সেই ওয়ার্ডবয়কে ডাক্তার দেখিয়ে ইমারজেন্সির সিন্ডিকেটরা রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। বিকেল বেলা ইমারজেন্সির ডাক্তার ১০৯ রোমে থেকে প্রাইভেট প্যাকটিস করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এতে করে ইমার্জেন্সেীতে থাকা চিকিৎসকরাও অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ে এসব স্থানীয় সিন্ডিকেটের কাছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরাও এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মত কোন সাহস পাচ্ছেনা।
হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে আসা রোগী ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এমএলএস আজিম দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে চিকিৎসার নামে অর্থ আদায় করে আসছেন।
এমএলএস আজিম এই পদেরধারী হয়ে কিভাবে ইমার্জেন্সেীতে ১৩ বছর ধরে চাকরি করছেন তা নিয়ে সকলের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে? তার খুঁটির জোর কোথায়? অনেকের অভিযোগ এমএলএস আজিম একজন মাদক আসক্ত। আজিম ইমার্জেন্সেীতে থেকে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে সেই টাকা দিয়ে ফেন্সিডিল কিনে পান করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষাও জরুরী।
দীর্ঘদিন একই স্থানে থাকায় গড়ে তুলেছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। জেলা শহরের প্রধান এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন ইমার্জেন্সেীতে।
বিশেষ করে রোড এক্সিডেন্ট, মারামারি, বিষ খাওয়া ও কাঁটাছেড়া রোগীদের নিয়ে ইমার্জেন্সীতে চলে রমরমা অর্থ আদায় বাণিজ্য। সেখানে একজন কাঁটাছেড়া রোগী নিয়ে গেলে এম এল এস ও ওয়ার্ড বয়রা রোগীর স্বজনদের দিয়ে ২-৩ জন রোগীর প্রয়োজনীয় ইনজেক্সন, সেলাই (স্ট্রেচ) সূতো কিনে আনেন। আর রোগীকে শেলাই ও ড্রেসিং করে বকশিশের নামে আদায় করেন ৩০০-৪০০ টাকা। না দিলে রোগীকে তেমন একটা গুরুত্বও দেওয়া হয় না। আর বেঁচে যাওয়া সেলাই স্ট্রেচ) সূতো আর ইঞ্জেকশন অন্য রোগীর কাজে ব্যবহার করে আদায় করেন দ্বিগুন টাকা।
সেখানে থাকা কর্তব্যরত ডাক্তারগন শুধু রোগীর প্রেসক্রিপশন লিখেন আর বাকী কাজগুলো এম এল এসরাই করে থাকেন। গ্রামের দূরদুরান্ত থেকে আসা রোগীরা তেমন একটা সচেতন না হওয়ার সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন ইমার্জেন্সেীতে থাকা এম এল এস ও ওয়ার্ড বয়রা। এমনটাই মনে করছেন সুশীল সমাজ । রয়েছে ছেলেদের সুন্নতে খাৎনা করিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়।
রোগীর স্বজন সেলিম অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে সিরিয়া আক্তার (৭৫) বছরের এক বৃদ্ধা পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে গেলে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে এম এল এস আজিম এবং আরিফ রোগীকে সেলাই এবং ড্রেসিং করে বলে সেলাই সুঁতো আর আনুসাঙ্কিক জিনিসপত্র বাহির থেকে কিনে আনতে হয়েছে অযুহাত দেখিয়ে ৩০০ টাকা দাবি করেন।
অথচ রোগীকে সরকারি হাসপাতালের সরবরাহ করা আনুসাঙ্কিক জিনিসই ব্যবহার করা হয়েছিল। পরে ইমার্জেন্সীতে দায়িত্ব প্রাপ্ত চিকিৎসকের কাছে নালিশ দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে এম এল এস আজিমকে ফোন করিলে তিনি বলেন, আমাদের সহকর্মীদের কাছে থাকা ভারতীয় সেলাই (স্ট্রেচ) সুতা দিয়ে কাজ করে বলেছি এটা বাহির থেকে কিনে আনলে আপনার ৩০০ টাকা লাগতো আপনি এখন ৩০০ টাকার একটু কম দিলেই চলবে। এ সময় রোগীর স্বজনরা রেগে গিয়ে চিকিৎসকের কাছে বিচার দিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা: সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর তাৎক্ষনিকভাবে অভিযুক্ত এম এল এস আজিমকে হাসপাতালের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।