
ডেস্ক রিপোর্ট : : বাড়িজুড়ে নিয়নবাতি। গ্যারেজে বিলাসবহুল অনেক গাড়ি। ভেতরে ফ্ল্যাটে চলছে পার্টি। লেজার লাইটের ঝলকানি। দেশি-বিদেশি মানুষের ভিড়।
গানের তালে তালে নাচে মেতে উঠেছেন স্বল্পবসনা নারীরা। পুরুষরা কম যাননি। সুযোগ পেলেই জড়িয়ে ধরছেন। গানের তালে-তালে নাচছেন তারা। এসব পার্টিতে আনন্দ যোগাতে অংশ নেন সুন্দরীরা। তারা ‘পার্টি গার্ল’ হিসেবেই পরিচিত।
সহস্রাধিক পার্টিগার্ল রয়েছেন ঢাকায়। তারা সাধারণত বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বাড়তি টাকা উপার্জন ও আনন্দ উপভোগ করার জন্যই তারা টাকার বিনিময়ে পার্টিতে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পার্টিগার্ল জানান, প্রতি রাতে পার্টিতে অংশগ্রহণের জন্য আয়োজকদের কাছ থেকে তিনি নেন তিন হাজার টাকা। শর্ত হিসেবে ওয়েস্টার্ন পোশাক পরে, সেজেগুঁজে পার্টিতে অংশ নেন। পার্টিতে আনন্দ দিতে অংশগ্রহণকারী পুরুষদের সঙ্গে নাচ করেন এই তরুণী। পানীয় পান করতে হয়। তবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রেখে সবকিছু করেন বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে ডিজে পরী বলেন, ডিজে হিসেবে আমরা গানের সঙ্গে বাজাই। আর পার্টির প্রয়োজনেই পার্টিগার্লরা দর্শকদের বিনোদন দিতে বিভিন্ন কাজ করেন। কেউ নাচ করেন। কেউ রিসিভশনে দায়িত্ব পালন করেন। পার্টিতে অংশগ্রহণকারী কেউ মাতাল হয়ে গেলে তাকে সামলাতে হয় তাদের। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। পার্টিগার্লদের প্রতিরাতে তিন থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত দেয়া হয়। কেউ কেউ বাড়তি সেবা দিয়ে পার্টিতে অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে আরো টাকা আয় করতে পারেন বলে জানান তিনি।
সূত্রমতে, যেসব সুন্দরী ভালো নাচ করতে পারেন পার্টিতে তাদের বেশি কদর। সানজিদা নামে এক পার্টিগার্ল জানান, কমার্শিয়াল পার্টিগুলোতে অংশ নিলে তার উপার্জন ভালো হয়। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ অংশ নেন। তাদের বেশিরভাগই সঙ্গী ছাড়া পার্টিতে অংশ নেন।
মূলত পার্টিগার্লদের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করার উদ্দেশ্যেই অংশ নেন তারা। তাদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ নানা উপহার পান।
কমার্শিয়াল পার্টি বেশি হচ্ছে ঢাকার বাইরে। গাজীপুর, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে।
গুলশান, বনানী ও উত্তরার বিভিন্ন বাসায় পার্টি হলে তাতেও অংশ নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এই তরুণী।
সকল পেশাই সম্মানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা আমার পেশা। এতে আমি ও আমার পরিবার নির্ভরশীল। তাই যেখানে বেশি টাকা আয় হয় সেসব পার্টিতে অংশ নিতে আমার আগ্রহ বেশি।
মিরপুর এলাকার এক তরুণ ব্যবসায়ী জানান, মাঝে-মধ্যে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরে এক বন্ধুর বাসায় পার্টি করেন তারা। সেখানে রাতের খাবারের আয়োজন থাকে। মদের ব্যবস্থাও থাকে। কারণ হিসেবে জানান, পার্টিতে দেশের বাইরের বন্ধুরাও অংশ নেন। তবে তাদের পার্টিতে নারী থাকে না বলে দাবি করেন এই তরুণ।
বাসা, হোটেল ছাড়া আড্ডা হয় বিভিন্ন স্থানে। এক মডেল জানান, কাজের প্রয়োজনে রাতে বের হন তিনি। মিউজিক ভিডিও’র শুটিংসহ নানা কাজ থাকে তার। কাজ শেষে খাওয়া-দাওয়া করেনই গাড়ি নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বের হন। রাতের যানজটহীন, নিরব ঢাকায় বেড়াতে ভালো লাগে তার। মাঝে-মধ্যে বন্ধুরা মধ্য রাতে হাতিরঝিলের ব্রিজে আড্ডা দেন। গান করেন।
এভাবেই রাতের পার্টি হয় তাদের। ওয়েস্টিন, রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেল, রিজেন্সি, সেরেনা, লা মেরিডিয়ানে আয়োজন করা নানা রকম পার্টির। রুম ভাড়া নিয়ে নিজ উদ্যোগে ছোট-খাটো পার্টি করেন অনেকে।
ডিজে পরী বলেন, প্রতি রাতেই নানা পার্টি হচ্ছে। তবে প্রতি মাসে ঢাকায় ডিজে পার্টি হয় অন্তত ১০ থেকে ১৫টি।
অধিকাংশ পার্টিতে তিনি অংশ নেন। তবে কমার্শিয়াল পার্টি বেশি হয় ঢাকার বাইরে। এছাড়া প্রতি রাতেই নানা পরিবেশে নানা ধরনের শত-শত পার্টি হচ্ছে এই ঢাকায়।