
এশিয়া খবর২৪ ডেস্ক :: অনেক ক্ষেত্রে তারকাদের সম্পর্কের মেয়াদ যেন পণ্যের বিক্রয়োত্তর সেবার মেয়াদের চেয়েও ক্ষণস্থায়ী!
কিছু কিছু সময় বিচ্ছেদটা যেন অলিখিতভাবে অবধারিতই হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় বিচ্ছেদের খবরটা এমনই আকস্মিক হয়, তাতে দুই পক্ষের যতটা কষ্ট, ভক্তকুলের দুঃখ যেন তাতে কিছুটা বেশিই থাকে। গত সপ্তাহে জনপ্রিয় জুটি তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে ওঠে। সবাই বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করতে থাকেন। আবার অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করে বলেছেন, সংগীতাঙ্গনে কি বিচ্ছেদের মিছিল শুরু হলো! সংগীতাঙ্গনের আলোচিত বিচ্ছেদগুলো নিয়ে আজকের আয়োজন-
১. হৃদয় খান-সুজানা জাফর
২. পুত্রসন্তান কোলে হাবিব-রেহান
৩. অনন্যা-রুমি-কামরুন্নেসা
৪. সালমা-শিবলী
হাবিব-রেহান
চলতি বছর দাম্পত্য জীবনের ইতি টানলেন সংগীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ ও রেহান। ১৯ জানুয়ারি তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় বলে জানান হাবিব। ওই সময় নিজের ফেসবুক পেজে হাবিব লিখেছেন, ‘আমি একটি খবর সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই, ১৯ জানুয়ারি দুর্ভাগ্যক্রমে আমার এবং রেহানের সমঝোতামূলক বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। আসলে মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কে টানাপড়েনের ঘটনা নতুন কিছু নয় এবং আমাদের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম কিছু নয়। বিগত পাঁচ বছরে আমরা একে অন্যকে জানার সময় পাই এবং ক্রমেই বুঝতে পারি, আমাদের লাইফস্টাইল ভিন্ন এবং দু’জনেই উপলব্ধি করি, আলাদা হয়ে যাওয়াটাই আমাদের দু’জনের শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য সবচেয়ে উত্তম সমাধান। আশা করছি, আমাদের একমাত্র সন্তান আলীম দুজনেরই ভালোবাসা পাবে।’
সম্প্রতি হাবিবর সাবেক স্ত্রী রেহান বিচ্ছেদের জন্য মডেল অভিনেত্রী পিয়া বিপাশা ও তানজিন তিশাকে দায়ী করেছেন। শুধু তাই নয়, হাবিব বিয়ে ছাড়াই তানজিন তিশার সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ তুলেছেন।
হৃদয় খান-সুজানা জাফর
দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রেমের পর মাত্র আট মাস ঘর করেছিলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হৃদয় খান ও মডেল-অভিনেত্রী সুজানা। বিয়ে হওয়ার মাত্র আট মাস পর ২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। সবাইকে জানিয়ে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেছিলেন দুজন। বিচ্ছেদের রাতে হৃদয় তার ফ্যান পেজে ‘হৃদয় খান’সহ ক্লাবে’একটি ভিডিওবার্তা আপলোড করেন। তাতে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা নিশ্চিত করেন তিনি। হৃদয় গণমাধ্যমগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা না বললেও সুজানা বলেছিলেন। পারস্পরিক বোঝাপড়া না হওয়ার কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয় বলে জানান তিনি।
তাহসান-মিথিলা
জনপ্রিয় তারকা জুটি তাহসান ও মিথিলা। এ দম্পতিকে শোবিজের অন্যতম সুখী ও সেরা জুটি হিসেবে মানতেন। অনেকেই সুখী দম্পতির উদাহরণ হিসেবেও তাদের নাম বলতেন। কিন্তু অবশেষে গত বৃহস্পতিবার নিজেদের বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন এই জুটি। তারা গত কয়েক মাস ধরেই আলাদা থাকছেন। বর্তমানে বিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি চলছে। আর তাহসান-মিথিলার সম্পর্ক ভাঙার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি তাদের ভক্তরা। গতকাল দুপুর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের এ বিচ্ছেদের খবর ভাইরাল হয়ে ওঠে। সবাই বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করতে থাকেন। আবার অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, সংগীতাঙ্গনে কি বিচ্ছেদের মিছিল শুরু হলো! ক’দিন আগেই সংগীত তারকা হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তার স্ত্রী রেহানের। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই বিচ্ছেদ ঘটলো তাহসান-মিথিলার। কিন্তু এ জুটির ঘর ভাঙায় বিস্মিত বেশি হয়েছেন তার ভক্ত-দর্শকরা। অনেকেই তাহসানের বিচ্ছেদ ঘোষণার স্ট্যাটাসের বিপরীতে অনুরোধ করেছেন বিষয়টি নিয়ে আরও একবার ভাবার। অনেকে বলেছেন একমাত্র কন্যা আইরার কথা চিন্তা করে হলেও তাদের বিষয়টি আবারও বিবেচনা করতে। এমনকি, বিবাহ বিচ্ছেদের ওই পোস্টের কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাহসানকে। তাই বিবাহ বিচ্ছেদের সেই পোস্ট সরিয়ে নিতে বাধ্য হন তিনি।
সালমা-শিবলী
২০০৯ সালে দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে একটি অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করতে গেলে জাতীয় সংসদের দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ শিবলী সাদিকের সঙ্গে শ্রোতাপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীর সালমার পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরেই দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি সম্পূর্ণ ঘরোয়াভাবে তাদের বিয়ে হয়। ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি সালমার কোল জুড়ে আসে এক কন্যা সন্তান। গত বছর শেষের দিকে মতানৈক্যের জের ধরে সালমা-শিবলী দীর্ঘ ছয় বছরের দাম্পত্য বিচ্ছেদ ঘটান। ১৯ নভেম্বর ধানম-ির একটি রেস্তোরাঁয় উভয় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতেই সমঝোতার ভিত্তিতে তালাকনামায় সই করেন দুজন। এ সময় বিয়ের দেনমোহর বাবদ ২০ লাখ টাকা সালমাকে বুঝিয়ে দেন শিবলী। বিচ্ছেদের পর সালমা ধানম-িতে নিজের ফ্ল্যাটে রয়েছেন। কিন্তু কন্যা স্নেহা বাবা শিবলী সাদিকের সঙ্গে থাকছে।
রুমি-অনন্যা-কামরুন্নেসা
আমেরিকায় স্টেজ শো করতে গিয়ে ২০১২ সালে তার গানের ভক্ত কামরুন্নেসার সঙ্গে পরিচয় হয় শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী আরিফিন রুমির। এরপর প্রেম ও নাটকীয় কায়দায় রুমি ও কামরুন্নেসার বিয়ে হয়। সেই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন রুমির প্রথম স্ত্রী অনন্যাও। তবে বিয়ে করার কয়েক মাসের মাথায় প্রথম স্ত্রী অনন্যার করা নারী নির্যাতন মামলায় কারাগারেও যেতে হয়েছিল রুমিকে। এরপর বিভিন্ন শর্ত মেনে বছর দেড়েক আগেই অনন্যার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক রুমির আনুষ্ঠানিক ডিভোর্স হয়। চলতি বছর জানুয়ারিতে রুমির দ্বিতীয় স্ত্রী কামররুন্নেসাকে তালাক দিয়েছেন।
ডিভোর্সের কারণ সম্পর্কে রুমি জানান, বিয়ের পর থেকে গত আড়াই বছর ধরে কামরুন্নেসা তাকে ও তার মাকে মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। তবুও সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য তিনি এতদিন সব সহ্য করেছেন। তাছাড়া কামরুননেসা তার প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে আমাকে বিয়ে করেছিল তখন। কিন্তু খবর পেলাম, এবার সে আমেরিকায় গিয়ে আগের স্বামীর সঙ্গে মেলামেশা করছে নিয়মিত। এ ঘটনাটি কামরুন্নেসার পরিবারকেও বারবার জানিয়েছেন রুমি। অথচ কোনো সুরাহা হয়নি। তাই তাকে ডিভোর্স দিতে বাধ্য হন তিনি।
নকীব খান-সামিনা চৌধুরী
জনপ্রিয় শিল্পী সুরকার ও সংগীত পরিচালক নকীব খান বিয়ে করেছিলেন সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরীকে। মতের অমিল হওয়ায় সামিনা চৌধুরী ডিভোর্স দেন নকীব খানকে। বিয়ে করেন অনুষ্ঠান নির্মাতা এজাজ খান স্বপনকে।
কুমার বিশ্বজিৎ-রুনা
আরেক জনপ্রিয় শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বিয়ে করেছিলেন মডেল অভিনেত্রী রুনাকে। ভেঙে যায় তাদেরও সংসার। রুনা বেছে নেন প্রবাস জীবন।
জেমস-রথি
জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস ভালোবেসে বিয়ে করেন অভিনেত্রী রথিকে। কিন্তু তাদের এ সংসার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। জেমস প্রেমে মজে গিয়েছিলেন প্রবাসী এক তরুণীর প্রেমে। আর এতেই তাদের সংসার ভেঙে যায় ।
রবি চৌধুরী-ডলি সায়ন্তনী
সংগীতশিল্পী রবি চৌধুরী ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনীকে। কিন্তু তাদের ভালোবাসার সংসার শেষ পর্যন্ত টেকেনি।