
ডেস্ক রিপোর্ট : : বলিউডের সবচেয়ে সুখী দম্পতি হিসেবে খ্যাতিমান অজয় দেবগন-কাজল।
সরল হলেও স্ত্রী কাজল অনেকটা মুখরা রমণী। সেই তুলনায় অনেকটাই অজয় খুব কম কথার মানুষ।
অজয়- ইলিয়ানা ডিক্রুজের আগামী ছবি ‘রেড’। আয়কর সংস্থার তল্লাশিসংক্রান্ত এ ছবি নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে নিজের সংসার ও ক্যারিয়ার নিয়ে অজয় যেন ঝাপি খুলে বসেছিলেন।
অজয় বলেন, তিনি আর কাজল মাত্র ৩০ মিনিটে বিয়ে করেন। এর পর তারা দুই মাস ধরে হানিমুনের প্ল্যান করেন। কথামতো ওয়ার্ল্ড ট্যুরেও বের হন। তবে এক মাস পরই ফিরে আসেন।
অজয়ের সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হল- প্রশ্ন: আয়কর দফতরের 'রেড'সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা আছে আপনার?
উত্তর: অন্য কারও নয়, আমার নিজের বাড়িতেই একবার ইনকাম ট্যাক্সের রেড হয়েছিল। আমি তখন নাসিকে, শুট করছিলাম। নব্বই দশকের ঘটনা। এটুকু মনে আছে, অফিসাররা এসে বাড়িতে কিছু উল্টোপাল্টা কাজ করেছিল আর সেই কারণে আমি তাদের বিরুদ্ধে কেসও করেছিলাম। পরে কেসটা কিন্তু জিতেও গেছিলাম। ‘রেড’ ছবিটি করতে গিয়ে আমি এমন অনেক অজানা তথ্যের সম্মুখীন হই, যা জানতে পেরে নিজেই অবাক হয়ে গেছি। যেমন আশি-নব্বইয়ের দশকে ইনকাম ট্যাক্স অফিসারদের খুন করে রাস্তার নর্দমায় ফেলে রাখা হতো! ইনকাম ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া আমার মতে একটি সোশ্যাল ক্রাইম।
প্র: আপনি নিজে কতটা সচেতন এসব বিষয়ে?
উ: আমি একটা কথাই সবসময় চিন্তা করি— যেন রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি। এমন কোনো কাজ না করি, যাতে নিজেরই রাতের ঘুম নষ্ট হয়। শান্তি বিঘ্নিত হোক এমন কাজ আমি করি না। হ্যাঁ, মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায়। কিন্তু চেষ্টা করি নিয়ম মেনে চলতে।
প্র: আপনার আর কাজলের বিয়ের ১৯ বছর হল। বিয়ের দিনের কোনো ঘটনা মনে পড়ে, যা এখনও স্মৃতিতে উজ্জ্বল?
উ: আমি আর কাজল ৩০ মিনিটের মধ্যে বিয়ে সেরে ফেলেছিলাম। ঘর ছেড়ে ছাদের ওপর আমরা বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের পর কাজল আবার দুই মাসের হানিমুন প্ল্যান করেছিল। সে বার আমরা ওয়ার্ল্ড ট্যুরে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু এক মাস পর ফিরে আসি! দুই মাস ধরে হানিমুন করা আমাদের পক্ষে একটু বেশিই লম্বা ছুটি হয়ে গিয়েছিল (হেসে)।
প্র: মেয়ে নাইসা এখন বিদেশে পড়তে গেছে। তার ক্যারিয়ার প্ল্যান কী? উ: এ মূহূর্তে পড়াশোনাটাই ওর কাছে সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট। ভবিষ্যতে ও যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা সেটি সাপোর্ট করব। এখন মোটে ১৪ বছর বয়স, অনেক সময় আছে।
প্র: মেয়েকে কখনও কোনো মূল্যবোধ শেখানোর চেষ্টা করেছেন?
উ: মূল্যবোধের পাঠ দেয়ার বয়স কিন্তু এখন আর নেই, যা দেয়ার আর ওর যা নেয়ার, সেটি আগেই হয়ে গেছে। মিডল ক্লাস পরিবারের যা যা ভ্যালুজ আমি আর কাজল শিখেছি, সেগুলোই ওকে বলেছি। আর আমি নিশ্চিত, নাইসা সেগুলো সব মনেও রেখেছে। আর যে রকম দরকার, সেভাবেই সেগুলো ও প্রয়োগ করে। আমাদের দুজনের মধ্যে বাচ্চাদের ব্যাপারে কাজলই যা একটু স্ট্রিক্ট। আমি বেশি প্যাম্পার করি, বকাঝকা কম করি।
প্র: ২৭ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাটালেন। সেটে যখন অজয় দেবগন যান, কী মানসিকতা কাজ করে?
উ: নতুন কাজ করার অদম্য ইচ্ছে আর কাজ করার খিদে- এ দুটি জিনিস যদি একজন অভিনেতার জীবন থেকে চলে যায়, তা হলে তার অ্যাক্টিং ছেড়ে দেয়া উচিত। আজ এত বছর পরও যখন নতুন ছবির সেটে প্রথম দিন যাই, আমার খুব কৌতূহল থাকে, মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন উঁকি মারে। একজন প্রকৃত আর্টিস্টের পরিচয় এসব বিষয়ের মধ্য দিয়েই জানা যায়। ফিল্মের বিষয় নির্বাচনের সময়ও আমি সতর্ক থাকি।
প্র: আপনার কি মনে হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারকাদের ভক্তরাও পাল্টে যাচ্ছেন? তাদের পছন্দ এখন আলাদা...?
উ: এক কথায় বললে, আমাদের জেনারেশনের ভক্তরা অনেক বেশি লয়াল। তাই আমাদের স্ট্রং একটি ফ্যান বেইজ রয়েছে। আই অ্যাম গ্রেটফুল! এখনকার দর্শক কনট্যান্ট নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করেন। স্টার ফ্যাক্টর গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। তার সঙ্গে কনট্যান্টও ভালো হওয়া খুব জরুরি। আমরা কিন্তু অনেক লাকি এ ব্যাপারে (হেসে)।
প্র: আগের অজয় দেবগন কথাই বলতেন না। এখন তো প্রমোশনের খাতিরে অনেক কথা আপনাকে বলতে হয়। নিজেকে বদলানো শক্ত ছিল?
উ: খুব একটা কিন্তু বদলাইনি। একটা সত্যি কথা বলি? ফিল্ম কতটা ভালো বা মন্দ সেটি কিন্তু শুক্রবার দুপুরের শোয়ের পরেই আমরা জানতে পারি। ছবি খারাপ হলে কোনো প্রচার ছবিকে বাঁচাতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে ওয়র্ড অফ মাউথ ছবির সবচেয়ে বড় প্রমোশন। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।