
এশিয়া খবর ডেস্ক:: ‘পরিচালক সমিতিকে পরিচালকের পক্ষে দাঁড়াতে হবে। কোন পরিচালক শুটিংয়ে যদি ট্রাবলের শিকার হয়
তাহলে পরিচালক সমিতিকেই আগে তার পাশে দাঁড়াতে হবে। কোন পরিচালকের ছবি নিয়ে সেন্সর বোর্ডে ঝামেলা হলে তার পক্ষে সমিতিকে দাঁড়ানো ইমানী দায়িত্ব, দাঁড়াতে হবে। শুধু তাই নয়, একজন ফিল্ম মেকার যে কোন সমস্যায় পড়লে তার পাশে পরিচালক সমিতিকেই দাঁড়াতে হবে। যদি সমিতি না দাঁড়ায় তাহলে এক সময় পরিচালকরা মনে করবে এই সমিতির কোন দরকার নেই। তাই এখন পরিচালক সমিতির সময় এসেছে সমিতির যে প্রয়োজনীয়তা ও চলচ্চিত্রে তাদের যে ভূমিকা রয়েছে সেটা প্রতিষ্ঠিত করা। আর এই প্রতিষ্ঠা করার একমাত্র উপায় হল যারা ছবি বানাচ্ছেন তাদের পাশে দাঁড়ানো। একজন পরিচালক কোন পক্ষের, কার লবিংয়ের, সাদা না কালো, হলুদ না বেগুনি এটা ভুলে সবার পক্ষে সমিতিকে দাঁড়াতে হবে। তাছাড়া এমনিতেই আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাষ্ট্রির অবস্থা এখন খারাপ। তার মধ্যে যদি পরিচালক সমিতি চলচ্চিত্র পরিচালকদের আগ্রহের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে তাহলে এটা ‘ডেঞ্জারাস’ বিষয় হবে।’ বলছিলেন ‘ব্যাচেলর’ ছবির পরিচালক মোস্তাফা সরওয়ার ফারুকী।
শুক্রবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) তে চলছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। বেশ উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়েই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ ভোট গ্রহণ পর্ব। দুপুর ১টার দিকে ভোট দিতে আসেন পরিচালক মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী। ভোট দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের কথাগুলো বলেন ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘টেলিভিশন’ ছবির এ নাবিক।
এ সময় এবার ভোটের মাধ্যমে নতুন করে যারা পরিচালক সমিতির কমিটি গঠন করবেন সেই কমিটির কাছে বেশ কিছু আহবানও করেন এ পরিচালক। ফারুকী বলেন, ‘পরিচালক সমিতিতে নতুন ব্লাডকে প্রবেশের সুযোগ করে দিতে হবে। নতুন পরিচালক সদস্য হতে আসলে তাদের পরীক্ষার নামে যে হেনস্তা করা এবং ২৫ হাজার টাকা ৫০ হাজার টাকা চাদা নেয়া এগুলো পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। নতুন ফিল্ম মেকারদের আগমণ অবারিত হতে হবে। এই পরীক্ষার নামে হেনস্তা ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা উচিত।
পরিচালক সমিতির গত কমিটির কাজে আপনি সন্তুষ্ঠ কী না জানতে চাইলে বেশ কৌশলী মন্তব্য করেন ফারুকী। তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তরট না দেই। মানে ঢালাওভাবে সন্তুষ্ঠ না আবার সন্তুষ্ঠ এটা বলা যাবেনা। কিছু কাজে সন্তুষ্ঠ আবার কিছু কাজে সন্তুষ্ঠ না।’
ফারুকী নির্মিত শেষ ছবি ‘শনিবার বিকেলে’। হলি আর্টিজান হোটেলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে ছবিটি। সম্প্রতি সেন্সর বোর্ডে আটকে দেয়া হয়েছে এটি। প্রথমবার ছবিটি দেখার সেন্সর বোর্ডের সবার ভালো লাগলেও অজ্ঞাত এক কারণে দ্বিতিয় দফায় আটকে যায় ছবিটির সেন্সর।
ঠিক এই সময়ে চলচ্চিত্র সমিতি কতটা আপনার পাশে রয়েছে? প্রশ্ন রাখলে ফারুকী বলেন, ‘‘সঙ্গে থাকা এক জিনিস আর আর সঙ্গে থেকে কার্যকরি ভূমিকা রাখা আরেক জিনিস। আমার ছবির ক্ষেত্রে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটে থাকে। সেই ‘ব্যাচেল’ ছবি থেকেই এটা শুরু হয়েছে। সব ছবি সেন্সর বোর্ডে একই ট্রমার ভেতর দিয়ে যায়। এবার ‘শনিবার বিকেলে’র ক্ষেত্রে একটা অপ্রত্যাশিত ব্যাপার ঘটলো। প্রথমবার সেন্সর বোর্ডের সবাই ছবিটি দেখে পছন্দ করলো। দ্বিতীয়বার দেখার পর সেই পছন্দটা উল্টে গেলো। ছবিটির কিন্তু কিছু বদলায়নি শুধু তাদের সিদ্ধান্তটা বদলে গেলো। সেটা কেন আমরা জানিনা। এমন কোন ঘটনা যদি ঘটতো তাহলে আমার আমার অনুমান পৃথিবীর যে কোন দেশের পরিচালক সমিতি এটা স্ট্রংলি ’প্রটেস্ট’ করতো। এইখানে স্ট্রংলি অবস্থান করা মানে কিন্তু সেন্সর বোর্ডের বিরুদ্ধে বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাওয়া নয়। আমরা রাষ্ট্র, সরকার ও সেন্সরবোর্ড সবার মধ্য থেকেই আমাদের স্বার্থ রক্ষায় ভুমিকা নিতে পারি।
তাহলে বলতে চাচ্ছেন আপনি পরিচালক সমিতির সদস্য হয়েও এই সমিতির কোন কার্যকরি সহযোগিতা পাননি? উত্তরে ‘ডুব’ ছবির এ নির্মাতা বলেন, ‘এটা আমার বলার কিছু নেই। আপনারা পরিচালক সমিতির কার্যক্রম দেখলেই এটা বুঝতে পারবেন। তবে আমি শুধু আমার ছবির আটকানোর বিষয়ে কথা বলছিনা। এখানে যে কোন চিত্রপরিচালক ট্রাবলে পরলে সবার আগে পরিচালক সমিতির এগিয়ে আসা দরকার। পৃথিবীর সব দেশে এটাই হয়। হয়না কেবল আমাদের দেশে। তবে এগিয়ে আসার চেয়েও আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সমিতিতে নতুন সদস্য প্রবেশের বেলায়। আমি আবারও বলছি নতুন সদস্য নেয়ার বেলায় পরীক্ষা ও চাদাবাজির বিষয়টি বন্ধ করা হোক।’